international

Loading...

বাংলাদেশে যে চলন্ত বাসে ধর্ষণ, সেই বাসের মালিকানা পাবে রূপার পরিবার BBC News বাংলা

রূপা ধর্ষণ এবং হত্যা মামলায় মাত্র ছয় মাসের মধ্যে যেভাবে আসামীদের বিচার শেষ করা হয়েছে, তা বাংলাদেশে খুব বিরল। যে চলন্ত বাসে এই অপরাধ হয়েছিল, সেটিও নৃশংসতার শিকার তরুণীর পরিবারকে দিতে বলেছেন বিচারক। কোন অপরাধের রায়ে এ ধরণের নির্দেশ, সেটিও সচরাচর দেখা যায় না।



ভারতের রাজধানী দিল্লিতে চলন্ত বাসে এক তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে আশ্চর্য মিল ছিল রূপা ধর্ষণ এবং হত্যার ঘটনায়। রূপাকেও চলন্ত বাসে ধর্ষন করা হয়েছিল, এরপর হত্যা করে লাশ ফেলে দেয়া হয়েছিল জঙ্গলে। মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই সেই ঘটনার বিচার হলো।

নির্ভয়া ধর্ষণের ঘটনা যেভাবে ভারতে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল, রূপাকে ধর্ষণ-হত্যার ঘটনাও একইভাবে আলোড়িত করে বাংলাদেশের মানুষকে।

ঘটনার পরপরই বাসটির চালক হেলপার সহ ৫জনকে আটক করে মামলা দায়ের করে পুলিশ।

এরপর গত ২৯শে নভেম্বর আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো আদালতে।

টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি এ কে এম নাছিমুল আক্তার বলছেন ঘটনার ১৭৩ দিনের মধ্যে মাত্র ১৪ কর্ম দিবসেই সব কার্যক্রম শেষ করে আজ চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় দিলো আদালত।

তিনি বলেন, "পাঁচ আসামীর মধ্যে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড আর একজনের সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়ে তাকে এক লাখ জরিমানা করেছে আদালত। এ টাকা এবং যে বাসে ঘটনাটি ঘটেছে সে বাসটি আদালতের আয়ত্তে নিয়ে রূপার পরিবারকে দেয়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।"

নাছিমুল আক্তার বলেন মাত্র ১৪ কর্ম দিবসে মামলাটি নিষ্পত্তি করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এ ট্রাইব্যুনাল।

যেভাবে ঘটেছিল:

ময়মনসিংহের একটি প্রতিষ্ঠানে মার্কেটিং বিভাগে কাজ করতেন রূপা, পাশাপাশি পড়তেন একটি ল কলেজে।

বগুড়ায় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে গত বছরের ২৫শে অগাস্ট বাসে ময়মনসিংহ ফিরছিলেন তিনি।

পরে তার মৃতদেহ পাওয়া যায় মধুপুর এলাকার জঙ্গলে।

বাংলাদেশে রাতের গণপরিবহনে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে
পরিচয় না পেয়ে প্রথমে বেওয়ারিশ হিসেবেই দাফন করা হলেও খবরটি ছড়িয়ে পড়ে গণমাধ্যমে।

দুদিন পর মধুপুর থানায় গিয়ে ছবি দেখে নিজের বোনকে সনাক্ত করেছিলেন রূপার ভাই হাফিজুল ইসলাম প্রামানিক।

আসামীদের আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তি থেকেই জানা গিয়েছিলো যে রূপা যে বাসে ফিরছিলেন সে বাসটি ঐদিন রাতে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা অতিক্রম করার পর সব যাত্রী নেমে যায়।

এরপর বাসটি কালিহাতি এলাকায় পৌঁছালে বাসের মধ্যেই ধর্ষণের শিকার হন রূপা।

মৃত্যু নিশ্চিত করে তাকে মধুপুর এলাকায় জঙ্গলের মধ্যে ফেলে দেয় বাসের হেলপারসহ অন্যরা।

রায়ে প্রতিক্রিয়া:

রূপার ভাই হাফিজুল ইসলাম প্রামানিক বিবিসিকে বলেছেন রায়ে ন্যায়বিচার পেয়েছে তাদের পরিবার।

তিনি বলেন, "আমরা সন্তুষ্ট। এখন আমরা চাই রায় দ্রুত কার্যকর হোক। তাহলেই আমার বোন অর্থাৎ রূপার আত্মা শান্তি পাবে। আর উচ্চ আদালতে গেলেও রায়টি যেনো বহাল থাকে,আমরা সেটিই চাইছি"।

তবে আসামী পক্ষের আইনজীবী শামীম চৌধুরী বলছেন তারা এ রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি।

তিনি বলেন, "আমরা প্রত্যাশিত ন্যায় বিচার পাইনি। এ মামলায় রাষ্ট্র পক্ষ কোনভাবেই প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। আমরা উচ্চ আদালতে যাবো এবং আশা করি সেখানে ন্যায় বিচার পাবো"।

আরও পড়ুন: রাতের গণপরিবহনে নারীরা কতটা নিরাপদ?

নদীতে বোমা পাওয়ার পর বন্ধ লন্ডনের সিটি এয়ারপোর্ট

তবে রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া যাই হোক রুপা ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর বাংলাদেশের রাস্তাঘাটে ও গণ পরিবহনের নারীদের নিরাপত্তা হীনতার বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছিলো।

বিশেষ করে যেসব শিক্ষিত নারীরা দূরদূরান্তে শিক্ষা বা কাজের প্রয়োজনে গণ পরিবহনে যাতায়াত করেন তারা কতটুকু নিরাপদ তা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছিলো।

আর সে কারণেই মানবাধিকার সংস্থাসহ অনেকেই আইনি প্রক্রিয়ায় সহায়তাতেই এগিয়ে এসেছিলো যাতে রূপা ধর্ষণ ও হত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।

0 Response to "বাংলাদেশে যে চলন্ত বাসে ধর্ষণ, সেই বাসের মালিকানা পাবে রূপার পরিবার BBC News বাংলা"

Post a Comment

Featured Post

বাংলাদেশে রাতের গণপরিবহনে নারীরা কতটা নিরাপদ? BBC News বাংলা

বাংলাদেশে নারী যাত্রীদের অনেকেই বলছেন, রাতে চলাচলের ক্ষেত্রে পরিবহন সংশ্লিষ্ট লোকজন কিংবা পুরুষ যাত্রীদের দ্বারা শারীরিক কিংবা মানসিক নির্য...

Top international News

loading...

Popular Posts